Purchase Of 24 Hours

প্রবন্ধ :: Purchase Of 24 Hours

এই যে বিশাল আকাশ, তার কত না সৌন্দর্য। আকাশকে যদি সময়ের দিক থেকে বিশেষ ভাবে ভাগ করা যায়, তাহলে বলা যায়- প্রভাতের আকাশ, সকালের আকাশ, মধ্যদুপুরের আকাশ, বিকেলের আকাশ, গোধূলির আকাশ, সন্ধ্যা বেলার আকাশ, গভীর রাতের আকাশ, ফজর নামাজের আকাশ ঘুরে আবার প্রভাতের আকাশ। এর প্রত্যেক পর্যায়ে ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য ফুটে উঠে বা সেজে থাকে। রাতের আকাশে তারা ফোঁটে থাকে। রাতের মায়াবী চাঁদে একটা রহস্য ঘেরা হাসি ভেসে ওঠে। এ কেমন ভালো লাগে তা হয়ত সবাই প্রকাশ করতে পারে না, তবে সবাই রাতের এ চাঁদকে উপভোগ করে থাকে। অনেক সময় এমন হয়, এর সৌন্দর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অনেকেই ভাষা হারিয়ে ফেলে। মাঝে মধ্যেই মনে হয়- ঐ তারাদের সাথে, ঐ চাঁদের সাথে মন ডুবিয়ে কথা বলি। নিজেকে হারিয়ে আরেক রাজ্যে ঘুরে আসি। নিজেকে হারিয়ে আবার অন্য রাজ্যে নিজেকে খোঁজে পেতে খুব ইচ্ছে করে।

 

আমরা জানি- গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত নিয়ে ষড়ঋতু অর্থাৎ এ ছয় ঋতু নিয়ে বাংলা বছর। এই ঋতুগুলোতে প্রকৃতি ভিন্ন ভিন্ন রূপে সেজে থাকে। ঋতুগুলোতে আলো-বাতাস, মেঘ-বৃষ্টি, গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীত, ফুল-ফসলে ভরে উঠে। সময়গুলোতে ভালো-মন্দ-তিক্ততা-প্রশান্তি ঘিরে থাকে। ঋতু ভেদে সাধারণত যে বৈশিষ্ট্যগুলো থাকার কথা তা অনেক সময় ব্যত্যয় ঘটে থাকে; তবে তার আপন বৈশিষ্ট্য ঠিকই ফোটে উঠে।

 

ঋতুর এ বৈশিষ্ট্যগত পুনঃরাবৃত্তি ছোট বেলা থেকেই দেখে আসা হয় বলে সামনের/আগত ঋতুগুলোর আবহাওয়া কেমন হবে তা সকলেই অনুমান করতে পারে। সে মোতাবেগ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পূর্ব-প্রস্তুতি নিয়ে রাখ। সত্যিই বিষয়টা দারুণ– বাংলা বছরগুলো ছয়টা ঋতু দ্বারা বেষ্টিত থাকে।

 

আমরা জানি, মহাকবি কালিদাস কর্তৃক রচিত ’মেঘদূতন’ একটা সার্থক মহাকাব্য। যক্ষ তার প্রভুর বাগানে কাজে করে ক্লান্ত হয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে এবং একই সাথে তার স্ত্রীর কথা ভাবছে। স্ত্রীর ভাবনাতে গিয়ে সে উদাসীন হয়ে পড়ে। এমন সময় হাতির পাল এসে দেবতার বাগান খেয়ে নষ্ট করে ফেলে। এতে করে যক্ষের উপর দেবতার ভীষণ রাগ হয়। তখন দেবতা যক্ষকে অভিশম্পাত দেন। এজন্য যক্ষকে শাস্তিস্বরূপ এক বছরের জন্য রামগীরী পর্বতের পাদদেশে নির্বাসিত করেন।

 

ঋতু ঘুরে যখন বর্ষা ঋতু এলো, তখন যক্ষের আসঙ্গ বাসনা আরও তীব্র হয়ে উঠলো। কৈলাশ পর্বতের পাদদেশে নির্বাসিত জীবনে প্রিয়তমা স্ত্রীর কথা মনে পড়ে তার। সে সময় যক্ষ প্রিয়তমা স্ত্রীকে নানান ব্যাকুলতা ভরা আকুতিময় অভিব্যক্তিগুলো মেঘের কাছে প্রকাশ করতে থাকে। যক্ষ ভাবে, উড়ে চলা মেঘগুলো তার প্রিয়তমা স্ত্রীর অবস্থান জানবে কি করে। তাই সে মেঘকে তার স্ত্রীর অবস্থান সম্পর্কে বর্ণনা দিয়ে থাকে-

‘মেঘগুলো যাওয়ার পথে দেথদে পাবে– উপবনগুলোতে কেয়া ফুলের বেড়া আছে; জাম গাছে পাকা জামগুলো কালো মেঘের মতো পেঁকে আছে; ঘরের চালে পায়রাগুলো দল বেঁধে বসে আছে; সিপ্রা নদী, বেত্র নদী, রেবা নদী আছে; উজ্জ্বয়িনী নগরী, অবন্তী নগরী (যেখানে বৃদ্ধরা উদয়ন ও বাসবদত্তার গল্প করেন), বিদিশা নগরী আছে; দেবগিরি পর্বত, বিদ্ধ্য পর্বত, কৈলাশ পর্বত আছে।

 

শেষে যক্ষ যখন স্পষ্টতই বুঝতে পেলো যে, তার এ আকুতি/অভিব্যক্তি মেঘের কাছে প্রকাশ করাটা কেবল নিষ্ফল প্রয়াশ মাত্র। এ যে তার বৃথা যাতনা কেবল। তাই যক্ষ আকুতি করে-

“বিধুর আমি, তাই, অথবা করুণায়, কিংবা বন্ধুতাসূত্রে,

জলদ, কারো, তুমি আমার প্রিয় কাজ, মিটাও অনুচিত যাতনা;

প্রাবৃটে দেশে-দেশে ঋদ্ধিশালী হ’য়ে বিহার কোরো

তুমি তারপরকখনো বা ঘটুক তোমার বিদ্যুৎ- প্রিয়ার ক্ষণেকের বিচ্ছেদ।”

 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ‘মেঘদূত’ প্রবন্ধ্যে আক্ষেপ করে বলেছেন- তখনকার ভারতবর্ষ কতোই সুন্দর ছিলো। কিন্তু এখন আর সেই ভারত বর্ষ নেই। নেই সেই পরিবেশ, সুন্দর সুন্দর নামগুলো। মানুষের মাঝেও নেই সেই হৃদ্যতা।

 

আজকের দিনে আমরাও একই ভাবে বলতে পারি, সেই ভারতবর্ষ কিংবা আমাদের বাংলাদেশটা নেই আর। ছোট বেলায় আমরা যে সময়টাকে দেখে এসেছি তা এখন কেবল স্মৃতির আয়নায় ছবি মাত্র হয়ে আছে।

 

এই নতুন সময়ে এসে আমরা কেন এমন আফসোস/আক্ষেপ পোষণ করছি? অতিবাহিত হয়ে যাওয়া সেই বহু যুগেরে পুরানো দিনগুলোতে তো আর মানুষ থেমে নেই। আমারা সেই সময়গুলোতে এখন আমরা অবস্থান করছি না। কালিদাসের সেই যে সময়গুলো আমরা দেখিনি। উপরন্তু আমাদের ছোট বেলায় দেখে আসা সেই সমাজ-সংসার-প্রকৃতি আজ আমাদের সন্তানদের কাছে একেবারেই অচেনা; তাদের কাছে স্বপ্ন রাজ্যের গল্পের মতো মনে হবে! এরা বিশ্বাস করবে না যে, বাংলাদেশ দুধে-ভাতে কতটা সমৃদ্ধ ছিলো। বিলে-ঝিলে মাছের ছড়াছড়ি ছিলো। মানুষে মানুষে পরম আত্মীয়তার বন্ধন ছিলো। সন্ধ্যা নেমে এলে পুরো দেশ আঁধারে ডুবে যেতো। সন্ধ্যা বেলাতেই সবাই ঘুমের রাজ্যে শান্তিতে হারিয়ে যেতো। পুরো দিনময় ছেলে-মেয়েরা দল বেধে নানান খেলায় মেতে থাকতো।

 

প্রশ্ন জাগে, সেই যে দিনগুলো আর এই যে দিনগুলোর মাধ্যে কী পার্থক্য কিংবা সে সময়টা থেকে কেন কিংবা কীভাবে আজকের দিনেগুলোতে বয়ে এলো? কিছু কথা যুগের পর যুগ মানুষের মুখে মুখে ভেসে এসেছে নানান গল্পে, নানান কৌতুক আর গানে গানে। কেউ বা বইয়ের পাতায় লিখে গিয়েছেন।

 

যে জীবনের কথা আমরা পুস্তক থেকে জানতে পারি, সেখানে মানুষগুলো লজ্জা নিবারণের জন্য গাছের বাকল/ছাল/লতাপাতা ব্যবহার করত। এরপর সময়ের পরিক্রমায় উন্নত হতে হতে আজকের এই সভ্য জগতে এসে মানুষ পৌঁছে গিয়েছি।

 

সাধারণত, আমরা যখন কোনো কাজ করে থাকি তা শুরুতেই সর্বোচ্চ সুন্দর হয় না। পর্যায়ক্রমে সুন্দর ও বেশি কার্যকরী হয়ে উঠে। তেমনি আমাদের পোশাকে, আমাদের বাসস্থানে, আমাদের জীবন চরিত্র থেকে শুরু করে সর্বাবস্থায় সুন্দরের দিকে ধাবিত হতে থাকে।

 

আমরা আজ পৃথিবীর বুকে দাঁড়িয়ে আছি তা বহুযুগের কাজ বা শক্তির মাধ্যমেই। মতান্তরে মেনে চলা কিংবা উপার্জনের মাধ্যমে। পৃথিবীর সৃষ্টি লগ্ন থেকে বর্তমান সময় অবধি যে সকল উপদানগুলো ব্যবহার করে আমরা নিজেদেরকে উৎকর্ষ সাধন করে চলছি, তার প্রত্যেকটা উপদানই সব যুগেই ছিলো। সেই জিনিসগুলোকেই বিজ্ঞানদ্বীপ্ত উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে আমরা তা বেশি কার্যকরী ও সময় উপযোগী করে তুলেছি। সর্বোত্তম ব্যবহার খোঁজে পেয়েছি। একই ভাবে, নানান ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে সফলতার মুখ দেখেছি। আজ তাই জীবন এতো সহজ ও সুন্দর হয়েছে। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগে ব্যবস্থার সমৃদ্ধি লাভ করেছে। একই ভাবে জীবনের সবচেয়ে ভালো বিষয়গুলো বেঁছে বের করে নেবার ক্ষমতা অর্জিত হয়েছে।

 

আমরা যদি জানতে পারি, সে অনার্স পাশ করেছে এবং সাত বছর ধরে চাকরিতে নিয়োজিত। আরও সহজ হয়, যদি জানতে পারি, সে কত সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছে। তখন সহজেই অনুমান বা হিসেব করতে পারি তার বয়স কত। অর্থাৎ সে এই পৃথিবীতে কত বছর ধরে এসেছে অথবা জীবিত আছে। অথবা এমন হলো, কাউকে চাকরিতে নিয়োগ নেওয়া হলো। তাকে বলা হলো, আপনার এই এই কাজ করতে হবে। তখন চাকরি প্রার্থী থেকে জিজ্ঞাসা আসবেই তাকে কতটা সময় ধরে কাজ করতে হবে। অর্থাৎ প্রতিদিন চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে কত ঘন্টা চাকরির পেছনে দিতে হবে। এবং প্রার্থী এটাও জানতে চাবে যে, কাজ টি তার সাধ্যের মধ্যে  কতটুকু আছে। মানে কাজের চাপ কেমন। এ জন্যই সময়, কাজের চাপ, কর্ম পরিবেশ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে পারিশ্রমিক নির্ধারণ হবে।

 

একই ভাবে সবকিছুর মূল্য নির্ধারিত হয়। এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো– সময়। সবকিছুর সাথে সময়ের মূল্য যোগ করা হয়ে থাকে। পণ্যের মূল্য, স্থানের মূল্য, বাড়ির মূল্য সহ সব সবকিছুর ক্ষেত্রেই সময়কে বিবেচনায় রেখে মূল্য বিবেচনা করা হয়।

 

তবে কী এটা নিশ্চিত যে, শুধু কাজের মূল্যায়ন হয় না? একই সাথে সময়ের মূল্যও জড়িত? এই সময়ের মূল্য অনেক সময় কর্মের চেয়ে মূল্যবান হয়ে উঠে। সময় ব্যয় প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। কে সময় দিচ্ছে, কতক্ষণ ধরে সময় দিচ্ছে, কিভাবে সময় দিচ্ছে ইত্যাদি বিষয়। অর্থাৎ কর্ম যেমন মূল্যবান; ঠিক তেমনি সময়ও মূল্যবান। আর এ দুইয়ে মিলে মূল্য নির্ধারণ হয়।

 

আমরা হাত ঘড়ি পরে থাকি। ক্ষুধা লাগলে খাবার খাই। কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন হলে বিভিন্ন যানবাহন ব্যবহার করে থাকি। অর্থাৎ জীবন অতিবাহিত করার জন্য যখন যা কিছু প্রয়োজন তা আমরা কখনো টাকা দিয়ে কিনে নিই; কখনো নিজেরাই তৈরী করে ব্যবহার করে থাকি।

 

এর মানে দাঁড়ালো, আমরা যা ভোগ করে থাকি কিংবা তৈরী করে থাকি তার প্রত্যেকেটির দাম বা মূল্য রয়েছে। এই মূল্যের সাথে সময় উতপ্রুত ভাবে জড়িত। পণ্যমূল্য আবার কর্মক্ষমতা, সুস্থতা, কর্মপরিবেশ দ্বারাও প্রভাবিত হয়ে থাকে।

 

ব্যক্তি বিশেষের কাছে ভোগ করাটা কম-বেশি হয়ে থাকে। শহরে বসে একমুঠো ভাত মুখে তুলতে একজন ভোক্তা যতটা অর্থ(টাকা) ব্যয় করে হয়, তা আবার গ্রামের কৃষকের কাছে ততটা ব্যয় সাপেক্ষ নয়। একমুঠো ভাত তৈরীর পেছনে চাষাবাদ থেকে শুরু করে মাড়াই ও চূড়ান্ত প্রস্তুতি এমনকি দোকান ঘুরে ভোক্তার পর্যন্ত পৌঁছাতে যতটা পরিশ্রম ও সময় জড়িত, তার সমস্ত কিছু দিয়ে মূল্য নির্ধারণ করা হয়। অতঃপর তা ভোক্তা কিনে নিয়ে  চূড়ান্ত অধিকারী হন।

 

এর মানে এই নয় কি, ভোক্তা তার ক্রীত সম্পদ কেনার সাথে সাথেই এর পেছনের সময়কেও কিনে নিয়েছেন?

 

বিষয়টা এমন যে, একজন ইঞ্জিনিয়ার একটা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছেন। সেই সাথে তাকে কাজ শেষ কিরার জন্য সাত দিনের সময় বেধে দেওয়া হলো। কাজটা কিভাবে হবে তার পুরোটাই ঐ ইঞ্জিনিয়ার সাহেব জানেন এবং অভিজ্ঞ। সময় নির্ধারিত না থাকলে হয়ত সে একই কাজটা শেষ করতে পারতেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তার একার পক্ষে শেষ করা সম্ভব নয়। ইঞ্জিনিয়ার সাহেব কাজটা করতে পারবেন না ঠিক এমন নয়; কিন্তু সময় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই কাজটাকে যথাসময়ে সম্পাদন করার জন্য সহযোগী হিসেবে প্রয়োজন মতো লোকবল/কর্মী নিয়োগ নিয়ে নিলেন। এবং সে সময় মতো কাজটা সম্পাদন করলেন।

 

তাহলে এটা স্পষ্টতই যে, কর্মের পাশাপাশি সময়কে কেনা যায়।

 

আমরা প্রতিদিন যা যা ব্যবহার করে থাকি তার বেশির ভাগ নিজেরা তৈরী করি না। প্রস্তুত করি না। অনেক সময় এ পণ্যগুলোকে নিজেদের সুবিধার জন্য বিভিন্ন আকার দিয়ে থাকি শুধু। আবার অনেক ক্ষেত্রে তাও দিই না। শুধু ভোগ করে থাকি।

 

তাহলে একই সাথে আরও একটি প্রশ্ন করা যায়, আমরা সত্যিই ‍কী দিনের ২৪ ঘন্টা ব্যবহার করে থাকি? তুমি/আমি/আমরা প্রকৃতপক্ষেই বছর ঘুরে কত ঘন্টা ভোগ করে থাকি। বেঁচে থাকার হিসেবই-বা কত বছর? বিস্মিত নও–তো?

 

কেউ খাতার হিসেবের আশি বছর পার করেছে। সত্যিই কি তাই– আশি বছর? অন্য কারো কাছ থেকে কতটা সময় নিয়েছি; আর আমার থেকে  অন্যরা কত বছর নিয়েছে?

 

প্রশ্ন-? হিসেব-?

প্রবন্ধ :: Purchase Of 24 Hours

লেখক :: তারিকুজ্জামান তনয়

ঢাকা :: ২০২৫

 

 

 

 

 

bonopushpa ♦

 

 

 

 

কেউ খাতার হিসেবের আশি বছর পার করেছে। সত্যিই কি তাই– আশি বছর? অন্য কারো কাছ থেকে কতটা সময় নিয়েছি; আর আমার থেকে  অন্যরা কত বছর নিয়েছে?

 

 

 

 

 

 

সাহিত্য সুখী করে..

 

 

 

 

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments