সে দিনের প্রভাত ফুল
সারা রাত বৃষ্টি হয়েছে,
ভোর বেলাতে দেখা নেই তার।
ভোরের আলোতে বাড়িময়-
পাখির কুজনে সাড়া পড়লো হায়;
ঘুমের বুড়ি পালায়।
দোর খোলে আলোর স্নানে মজিনো এ ধরা,
সবাই সজাগ, তৈলক্য গাছ-লতা-পাতা।
বায়ু ছোটে ধেয়ে ধেয়ে,
পাখি ডাকে ডালে ডালে,
ভরা আনন্দে ভরা!
হায়! ছুটিনু বাহিরে,
ক্ষেত মাড়িয়ে যেথা আছে বন।
হেথা দুলিতেছে ঝোপের আড়ে-
তরু লতা ভরা ফুল, কচিকাঁচা পত্র-পল্লব।
সে ফুলের-
কী অপরূপ শোভা, কী মুগ্ধতাময় রঙ;
সাদার উপর বেগুনি রঙের আভা,
ঠিক ঠাহর করা যায় না
আরও আছে ’কী বাহারি রঙের আস্তরণ!’
হাসি মুখে দোল খেলে বামে-ডানে,
তাতে মেতেছে ভ্রমর শত লুকচুরি ক্রীড়ায়;
বাতাস এসে দোলা-দোল করে,
কী মজায় মজিনু হেথায়।
নাম না জানা পাখি বসলো ডালে- একাকী;
করুণ সুরে ডেকে খুঁজে মরে
-’কী যেন হারিয়েছে কোথায়!’
পাখির ব্যাথাতুর মনে-
অন্যরা কোথায় কে মজেছে সুখে
এতো খানি নেই খেয়াল- তার!
ঝাঁকুনি দিয়ে ক্ষিপ্র বেগে উড়ে গেলো..
তাই, ঝরঝরায়ে ঝরলো জল
পাতার আঁড়াল ফেলি।
উপর্যপুরি ঝড়লো জল-
শোভামণ্ডিত হাসি মাখা ফুলের পর!
তাই দেখে মোর প্রাণে জাগলো ব্যথা;
’আহা!’- বানে মিটিলো না কথা আর।
পাছে না মলিন হয় অমন ফুলের রূপ!
আরও ফিরি তীব্র কৌতূহলে
ব্যথাতুর প্রাণে;
বিষাদ ছড়ালো ধুমধুম।
কী অপরাধ করে গেলো অচেনা পাখি!
ধরতে পারলে বুঝিয়ে দিতাম-
’আপন ব্যথা ছড়াবে কেন
হেয়ালের বসে হেয়ালী !
কোন না কোন ব্যথায় কাতর তুমি নিজেও,
আর জনারে কেন ব্যথা দিলে?
এমন বিবেক পুড়িয়েছো কবে?- ওহে!
অতঃপর-
মোর খেয়ালে আসলো হেথা- কী চমৎকার বটে,
ঝড়া জলে কাবু ফুল ক্ষণ পরে
হাসি মুখে ফিরলো হেসে;
যেনো এও রঙ ছিলো জীবন জীবনেরই অংশে।
সে ফুলের যেন-
নেই অভিযোগ; নেই কোনো ক্লেশ!
জগৎ যাই করেছে তাই নিয়েছে মেনে;
বিধাতার মহিমা আপন করেছে- জেনে;
তাই রচেছে, হয়েছে সুখ-খুশিতে উদ্বেল।
–
ব্রত হোক এই মোর-
জগতের খেলা নিপাত যাক-
জানাই তারে শতশত ধিক্!
মোদের দিয়েছেন বিধাতা যা,
তার প্রতি ধ্যান হোক,
উৎকর্ষ যাচি অধিক অধিক।
—-
সে দিনের প্রভাত ফুল
তারিকুজ্জামান তনয়
২২শে এপ্রিল ২০২৪, ঢাকা।